নোয়াখালী সদর উপজেলায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে আনোয়ার হোসেন (৫৫) নামে এক ট্রাক
চালককে তুলে নিয়ে মারধর ও মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সকালে সদর উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া সাহেবের হাট সংলগ্ন লিটনের
বাড়িতে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা
হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারকৃত আনোয়ারের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, ভাই মো. লিটন ও ভাতিজা সাকিব হাসান বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আনোয়ার একজন নিরীহ ট্রাক চালক। তিনি নিজের
উপার্জনকৃত অর্থে কোনরকম পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। গত ২৩ অক্টোবর
সন্ধ্যায় একটি অজ্ঞাত মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে ভুক্তভোগী আনোয়ার
হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ার স্থানীয়
শাহিন ভূঁইয়ার বাড়ীর সামনে গেলে অজ্ঞাতপরিচয় ৪জন ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক
মাটিতে ফেলে মারধর করতে শুরু করেন এবং জবাই করে হত্যার হুমকি দেয়। এসময়
আনোয়ার চিৎকার করলে তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে
তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এসময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আনোয়ারের স্ত্রী ও
বিবাহযোগ্য কন্যাকে মারধর করে হেনস্থা করে। পরে স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের
পরিচয় জানতে চাইলে, তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে আনোয়ারকে
কি কারণে আটক করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোন মামলা আছে কিনা, এসব কিছুই না
জানিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
বক্তারা বলেন, ওইদিন রাতে
তারা আনোয়ারকে ছাড়াতে থানায় গেলে ডিবি পুলিশ তাদের জানায় আনোয়ারকে
ইয়াবা’সহ আটক করা হয়েছে। এসময় তারা আনোয়ারের কাছে পাওয়া ইয়াবার প্রমাণ
দেখাতে বললে পুলিশ তা দেখাতে ব্যর্থ হন এবং তাদেরকে থানা থেকে বের হয়ে যেতে
বলেন। থানা থেকে বের না হলে তাদেরও ইয়াবা দিয়ে মামলা দেওয়া হবে বলে হুমকি
দেন। পরে তারা জানতে পারেন ডিবি পুলিশ থানার ভিতর আনোয়ার সামনে ১৪০ পিস
ইয়াবা দিয়ে ছবি তুলে তাকে আদালতে সোপর্দ করেন।
বক্তাদের
দাবি, আনোয়ার একজন শ্রমিক মানুষ। তিনি কোন মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নন।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সরকারি খালের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিনের ধন্ধের জের ধরে
ডিবি পুলিশ দিয়ে আনোয়ারকে ফাঁসানো হয়েছে। তারা আনোয়ারের নিঃশর্ত মুক্তি
দাবির সঙ্গে সঙ্গে আনোয়ারকে ফাঁসানোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওয়ায় আনার দাবি
জানান।
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নোয়াখালীর
অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান
পরিচালনা করে ১৪০ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মো. আনোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পরই আসামির বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।