নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার
(১১ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার
মানোন্নয়ন, নৈতিকতা, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
সমাবেশে চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা নুরুল
হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনা
কমিটির সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি তাঁর
বক্তব্যে বলেন, ব্রিটিশের শাসনামল থেকে বিগত ৮০ বছরে আমরা একটা শিক্ষা
ব্যবস্থা দাঁড় করাতে পারি নাই। পাকিস্তানের ২৩ বছর গেল, ৪টি শিক্ষা কমিশন
হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা দাঁড় করানো যায়নি। হাসিনা সরকার ৪ বার সিলেবাজ
কারিকুলাম পরিবর্তন করেছে, এটা নিয়ে বহু হাসাহাসি হয়েছে।
তিনি
বলেন, একাত্তর সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে কার কি ভূমিকা, এটা নিয়ে আমাদেরকে
সঠিক ইতিহাস কেউ দেয় নাই। একজন এসে আমাদেরকে পড়ায়, আরেকজন এসে সেই বই বাদ
করে দেয়। এভাবে কোটি কোটি টাকার বই ধ্বংস করেছে। এতে আমাদের শিক্ষিত সমাজ
আজ দিশেহীন হয়ে পড়েছে। ফলে মানুষ এই সমাজে বসবাসের অযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সেলিম
বলেন, এখন বর্তমান প্রজন্মকে যদি রক্ষা করতে হয়, বাঁচাতে হয়,তাহলে গোড়ায়
হাত দিতে হবে। সর্ব প্রথম তাদেরকে একটা আদর্শ শিক্ষা দিতে হবে।
হোসাইন
মোহাম্মদ সেলিম আরো বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে সঠিক, নৈতিক ও
বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার বিকল্প নেই। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ঘাটতি উল্লেখ
করে তিনি একমুখী ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা প্রবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের
উদ্বোধনী বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল হক বলেন, এই অঞ্চলে
দীর্ঘদিন শিক্ষার ঘাটতি ছিল। শহরে গিয়ে অনেকে পড়াশোনা করলেও গ্রামে থাকা
অনেকেই অশিক্ষিত অবস্থায় বিদেশে চলে যেত। সেই অভাব পূরণের লক্ষ্যেই এই
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। তিনি শিক্ষক-অভিভাবকদের সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করেন।
প্রধান শিক্ষক রাশিদুল হাসান
বিদ্যালয়ের অর্জন ও শিক্ষার মান উন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন,
প্রত্যন্ত এলাকায় হলেও এখানে রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সম মননের তরুণ ও
মেধাবী শিক্ষক দল। বিভাগভিত্তিক গবেষণা বিভাগ, হোম কেয়ার, স্পেশাল কেয়ার,
নাইট কেয়ারসহ শিক্ষার্থী উন্নয়নে আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে।
সমাবেশে
বার্ষিক পরীক্ষায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে
শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান, নাটিকা, অভিনয় ও কৌতুক
পরিবেশন করেন। দুই শতাধিক অভিভাবক ও অতিথির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর
হয়ে ওঠে।
সমাবেশে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।