ত্রিপুরার ভগ্নাংশ কুমিল্লার সঙ্গে নয়, নোয়াখালীর স্বনামেই নোয়াখালীকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে অতীতের ন্যায় আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে বৃহত্তর নোয়াখালী। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুসের হস্তক্ষেপ চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ ও সম্মিলিত নোয়াখালীবাসী।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বৃহত্তর নোয়াখালীর ১ কোটি মানুষের প্রাণের এ দাবিতে মানববন্ধন সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
কুমিল্লার সঙ্গে বিভাগ দিলে বাঁধবে লড়াই রাজপথে স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে নোয়াখালী প্রেসক্লাব ও টাইন হলের মোড় হয়ে জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে নোয়াখালীর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, নোয়াখালী সরকারী কলেজ, চৌমুহনী সরকারী সালেহ আহমেদ কলেজ ও মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীকে প্রশাসনিক বিভাগের দাবিতে মিছিলে আর স্লোগানে সমগ্র শহরকে প্রকম্পিত করে তোলেন।
এসময় মানববন্ধন-সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সীমান্তের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক সাইফুর রহমান রাসেল, অ্যাডভোকেট সামছুল ফারুক প্রমূখ।
এসময় প্রথম আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান, ভোরের কাগজ ও নাগরিক টেলিভিশনের নোয়াখালী প্রতিনিধি সাংবাদিক মোহাম্মদ সোহেল, সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবু, ইমাম উদ্দিন আজাদ, নাসির উদ্দিন মিরাজ, কামরুল কানন, ডিএলএইচসির সভাপতি হোসাইনুল বাশার সিয়াম, ছাত্র অধিকার পরিষদের বেগমগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি সিনবাদ শাকিল, নিরাপদ নোয়াখালী চাই সংগঠনের সদস্য সচিব মুরাদ, চৌমুহনী ব্লাড ফাউন্ডেশনের সভাপতি টিআই সুজন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোয়াখালীর সমন্বয়ক ইয়াসিন আরাফাত, মো: ওমর, সার্ভিস ফর হিউম্যান বিয়িং অর্গানাইজেশন (এসএইচবিও) এর সংগঠক ফাহিদা সুলতানা রিপুসহ নোয়াখালীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক সাইফুর রহমান রাসেল বলেন, ধনে, মনে, জনে, ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিপূর্ণ ২০০ বছরের পুরনো জেলা আমাদের নোয়াখালী। ঐতিহ্যবাহী এই জেলাটি বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির শতকরা ৩৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও ৭ লক্ষাধিক প্রবাসী অধ্যুষ্যিত এই জেলার প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনসহ জ্ঞানী-গুনীর জেলা নোয়াখালীই ৯ম প্রশাসনিক বিভাগের যোগ্য দাবিদার। তাই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ঢাকা থেকে মাত্র ৮০ কি. মি. দূরত্বের কুমিল্লা নয়, ১৬০ কি. মি. দূরত্বের স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা নোয়াখালীকেই বিভাগ হিসেবে ঘোষনা ও বাস্তবায়ন চান বৃহত্তর নোয়াখালীর এক কোটি মানুষ।
তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীর গনমানুষের অনুমতি ছাড়া কিংবা গনশুনানী ছাড়া যদি কুমিল্লার সঙ্গে নোয়াখালীকে সংযুক্ত করে বিভাগ ঘোষনা করা হয়, তাহলে নোয়াখালীবাসী কখনোই তা মেনে নিবেনা। প্রয়োজনে আমরা চট্রগ্রামের সঙ্গেই থাকবো, তবুও কুমিল্লার সঙ্গে বিভাগে যাবো না। আর বিভাগ বিষয়ে যদি নোয়াখালীকে নিয়ে কোনো চক্রান্ত করা হয়, তাহলে নোয়াখালীর তরুন প্রজম্ম প্রয়োজনে আদালতের স্বরণাপন্ন হবে। তবুও নোয়াখালীকে বিভাগের ঘোষনা না নিয়ে ঘরে ফিরবে না।