আমেরিকার বিমান বাহিনীর এক সিনিয়র সেনা গাজার জনগণের দুর্দশার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে অনশন করেছেন। ল্যারি হেবার্ট নামের ওই মার্কিন সেনা হোয়াইট হাউজের সামনে গত রবিবার (৩১ মার্চ) থেকে অনশন শুরু করেছেন।
হেবার্ট স্পেনে তার কর্মস্থল ত্যাগ করার সময় থেকে বার্তা লেখা একটি প্ল্যাকার্ড বহন করেছেন। বার্তাটি হলো: বিমান বাহিনীতে নিয়োজিত পদস্থ কর্মকর্তা, গাজার মানুষেরা যখন ক্ষুধার্ত, তখন খাবার মুখে দিচ্ছেন না।
আমেরিকার এই সেনাও অ্যারন বুশনেলের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি অপরাধের প্রতিবাদে অনশন করেছেন। বুশনেল ছিলেন আমেরিকার বিমানবাহিনীর এক তরুণ পাইলট। ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজায় মজলুম ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যায় হোয়াইট হাউজের সমর্থন ও সহায়তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে নিজের গায়ে আগুণ ধরিয়ে দেয়।
ল্যারি হেবার্ট এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন: গাজার বেসামরিক মানুষেরা ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, তাদের ওপর বোমা হামলা হচ্ছে, প্রতিটা মুহূর্তে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে, সে কারণেই আমি অনশনে আছি। অ্যারন বুশনেল যা করেছেন তা ছিল দু:সাহসী এক অভিযান, তার সেই পদক্ষেপ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি তার মধ্যে নিজেকে দেখেছি কারণ সে যা অনুভব করেছিলো ঠিক সেরকম আমিও অনুভব করেছি।
আমেরিকার এই সৈনিক বুশনেলের প্রতিবাদী পদক্ষেপকে অনন্য এবং কার্যকর বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন: যে বিষয়টি আমাকে ক্ষুব্ধ করেছিল তা হলো তার পদক্ষেপের পর সর্বব্যাপী নীরবতা। এমনকি সরকার কিংবা সেনাবাহিনীর কোনো একজনকেও অ্যারন সম্পর্কে কিছু বলতে দেখলাম না। তারা তার নামটা পর্যন্ত উল্লেখ করে নি। তবে আমি দেখেছি গাজা এবং ইয়েমেনের লোকেরা তার ছবি প্রকাশ করেছে এবং তাকে সম্মান করেছে। সেইসঙ্গে তার জন্য দুঃখ এবং সমবেদনাও প্রকাশ করেছে তারা।গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইতালির জনগণসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক চায় অবিলম্বে গাজা যুদ্ধ বন্ধ হোক। সেই লক্ষ্যে তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বহুবার বিক্ষোভ করেছে।