ঢাকা রবিবার, এপ্রিল ১৩, ২০২৫

Rupalibank

৬৬ বছরের বৃদ্ধকে বিয়ে করলেন তরুণী


স্মার্ট প্রতিনিধি
১৫:২৯ - বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫
৬৬ বছরের বৃদ্ধকে বিয়ে করলেন তরুণী

৬৬ বছরের শরিফুল ইসলাম। বিপত্নীক এই ব্যক্তিকে বিয়ে করলেন কলেজপড়ুয়া ২২ বছরের তরুণী আইরিন আক্তার। তারা সম্পর্কে নানা-নাতনি।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌর এলাকার দক্ষিণ কোর্টতলি এলাকায় শরিফুলের বাড়ি। আর কনে আইরিন উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ে। গত ২২ মার্চ তাদের বিয়ে হয়।

এ বিয়ের খবর-ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ছবিতে দেখা যায়, কনে বেশে এক তরুণীকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত এক বৃদ্ধ। বিয়ের পর থেকেই জেলাজুড়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে ‘অসম’ এ বিয়ের বিষয়টি।

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আইরিন ছোট থেকেই পড়ালেখায় অনেক ভালো। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার সঙ্গে আমার পরিচয়, আমাকে নানা বলে ডাকত। মেধাবী হওয়ায় তার পড়াশোনায় আমি অনেক সহায়তা করেছি। বড় হয়ে বিয়ের আলাপ শুরু হলে সে হুট করে আমাকেই বিয়ে করবে বলে জানায়। হতবাক আমি তাকে ভালো করে বোঝার সময় দিয়েছিলাম; কিন্তু নাছোড়বান্দা মেয়েটি আমাকেই বিয়ে করবে। শেষপর্যন্ত তাকে বিয়ে করেছি পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে।

জানা গেছে, আইরিন আক্তারের সঙ্গে বৃদ্ধ শরিফুল ইসলামের দীর্ঘদিনের পরিচয়। আইরিন আক্তার টাঙ্গাইলের একটি নার্সিং কলেজে পড়াশোনা করেন। ওই ছাত্রীর দুলাভাইয়ের নানা শরিফুল। সেই সূত্রে শরিফুল-আইরিন সম্পর্কে নানা-নাতনি। পরিচয়ের পর থেকেই আইরিনের পড়াশোনার সব খরচ বহন করছেন শরিফুল। নির্বিঘ্নে পড়াশোনা চালাতে ওই ব্যক্তি ছয় লাখ টাকা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে দিয়েছেন বেশ আগেই। সেই টাকার লভ্যাংশ দিয়েই পড়ালেখার খরচ চলে আইরিনের।

প্রায় ১৫ বছর আগে শরিফুল ইসলামের স্ত্রী মারা যান। ফলে তখন থেকেই তিনি একা হয়ে পড়েন। তিনি এলাকায় কারও ‘দাদা’ আবার কারও ‘নানা’ হিসেবে পরিচিত।

এলাকার লোকজন জানান, আইরিনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। ফলে চতুর্থ শ্রেণি থেকেই তার পড়াশোনার খরচ দিয়ে আসছেন বৃদ্ধ শরিফুল ইসলাম। আর সেই সময় থেকেই তাদের সম্পর্ক অনেক ‘গাঢ়’।

আইরিন আক্তার বলেন, ‘সম্পর্কে তিনি আমার নানা। পরিবারের অভাবের কারণে ছোট থেকেই তিনি আমাকে পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সহায়তা করে আসছেন। কিছুদিন আগে আমার পরিবার আমাকে বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছিল। আমি ভেবে দেখেছি, অন্য কোথাও আমার বিয়ে হলে আমার পড়ালেখা আর নাও হতে পারে। ফলে ভেবেচিন্তে আমি ওনাকেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। এতে প্রথমে আমার বাবা রাজি ছিলেন না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি রাজি হয়ে আমাদের বিয়ে দিয়েছেন।

শরিফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু মেয়েটি আমাকে গ্রহণ করে নিয়েছে সেখানে বয়স কোনো ব্যাপার না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসম এ বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই মানুষ নানান কথা বলছেন। কেউ হাসি-ঠাট্টা করছেন, কেউবা এ দম্পতিকে মন থেকে দোয়া করছেন।

এ প্রসঙ্গে আইরিন আক্তার বলেন, কারও কোনো চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তে আমরা বিয়ে করিনি। জেনে-বুঝেই বিয়ে করেছি। এখন কে কী বলল সেটা আমার দেখার বিষয় না।