ঢাকা সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

Rupalibank

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: মাথা চাড়া দিচ্ছে অপরাধচক্র


স্মার্ট ডেক্স
৬:০৯ - রবিবার, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: মাথা চাড়া দিচ্ছে অপরাধচক্র

রাজধানীসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। খুনোখুনি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, দখল ও মব জাস্টিসের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। জনমনে বিরাজ করছে অস্বস্তি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করলেও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কুলিয়ে উঠতে পারছে না তারা। সেই সঙ্গে কমপক্ষে ৯ শীর্ষ সন্ত্রাসী আদালতের মাধ্যমে জামিনে কারামুক্ত হয়ে দলবল নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরনো ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করায় সব মহলে নতুন আতঙ্ক বিরাজ করছে। সুত্র: ভোরের কাগজ

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় থানা ও কারাগার থেকে লুট হওয়া হাজারেরও বেশি অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া, এখনো কয়েকশ পলাতক কারাবন্দি গ্রেপ্তার না হওয়া, পটপরিবর্তনের পর পুলিশের মনোবল ফিরে না আসা, নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর অনেকের সংশ্লিষ্ট এলাকার অপরাধ সম্পর্কে ধারণা তৈরি না হওয়া, থানাগুলোতে যানবাহন সংকট, ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে জোর দেয়া, থানা ও ফাঁড়ি লুটের ঘটনায় তদন্ত শুরু হওয়া এবং সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে অপরাধের লাগাম টানা যাচ্ছে না। যৌথ অভিযানেও নেই স্বস্তির খবর।

এরমধ্যে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশপ্রধান। যদিও অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, কারাগার ও থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হওয়ার পর এখনো সেটি চলমান রয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি, উল্টো অপরাধ বাড়ছে। এক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণকে অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার না করলে তেমন সুফল আসবে না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। রাজধানীর একটি মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে গতকাল শনিবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, আমরা যে কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলাজনিত অবনতির ঘটনা প্রতিহত করতে চাই। এজন্য দুর্গাপূজার পর সারাদেশে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হবে। তিনি বলেন, আমরা দেখছি, অনলাইনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেগুলো ফ্যাক্ট চেক করে দেখা গেছে অধিকাংশই গুজব এবং মিথ্যা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা কী ধরনের আচরণ করব সে ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। সারাদেশে ৩২ হাজারের বেশি মণ্ডপে পুলিশ বাহিনীর ৭৫ হাজার সদস্য ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন আছে জানিয়ে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন আইজিপি। বলেন, কোনো ঘটনা ঘটিয়ে কেউ পার পাবে না। অপরাধী যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

ডিএমপির তথ্য বলছে, চলতি বছরে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ৫২টি চুরির ঘটনা, ৩৩টি অপহরণ, ১৮টি ছিনতাই ও ৯টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। চুরি, ছিনতাই অপহরণ ও ডাকাতির তথ্য বলছে, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে চুরি বেড়েছে ১৮টি, ছিনতাই ১০টি ও অপহরণ বেড়েছে ১১টি। বেড়েছে ডাকাতির ঘটনাও। আর সম্প্রতি দুটি জোড়া খুনসহ গত দুই মাসে ঢাকাতেই ৪০টির মতো ঘটনা ঘটেছে।

অপরাধের লাগাম টানার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা দিতে অনেক ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সেনসিটিভ ইস্যু হওয়ায় এই মুহূর্তে মণ্ডপে নাশকতা এবং যে কোনো অপতৎপরতা ঠেকানোকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। রবিবার (আজ) পূজা শেষ হবে। এরপর আমরা সাঁড়াশি অভিযান চালানোর বিষয়ে পরিকল্পনা করব। ইতোমধ্যে যেসব অপরাধ বাড়ছে সেগুলোর ওপর আমরা দৃষ্টি রেখেছি। অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না।

রাজনৈতিক দলগুল ও জনগণকে সোচ্চার না করলে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান তেমন ফল দেবে না জানিয়ে সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক ভোরের কাগজকে বলেন, পুলিশের কাজ সীমিত হয়ে গেলে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির পুরনো চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে।

পাশাপাশি খুনোখুনি, অপহরণ, মব জাস্টিসের মতো ঘটনাগুলোও বাড়ে। পুলিশ তার কাজটি পরিপূর্ণভাবে করতে পারছে না বলেই এসব চক্র সুযোগ নিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হলে সুফল মিলবে না, তা নয়। কারণ কারা এসব কাজে জড়িত, কোন এলাকায় কোন গ্রুপ অপরাধমূলক কাজ করে- পুলিশ এগুলো জানে। ফলে সাঁড়াশি অভিযানে কিছুটা চিত্র পাল্টাতে পারে। তবে তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, কারাগার ও বিভিন্ন থানার অস্ত্র লুট হওয়ার পর সাঁড়াশি অভিযানের কথা শুনেছিলাম এবং সেটি চলমান রয়েছে বলে জানি। এর মধ্যেই কিন্তু সব ঘটনাগুলো ঘটছে। ফলে রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সোচ্চার করতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। চলমান রাখতে হবে অভিযানও।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, আন্ডারওয়ার্ল্ড সক্রিয় করতে কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছে। একইভাবে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়ার পাশাপাশি চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকায় গত মাসে জোড়া খুনের একটি ঘটনায়ও শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের নাম এসেছে। সবশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন।

২০০১ সালে সরকার যে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম প্রকাশ করে তাদের মধ্যে অন্যতম এই সুব্রত। তার নামে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিস ঝুলছে। একটি দোকান দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে দেখা গেছে তাকে। পরে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকে কথা বলেছে। এ নিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এমনকি অপরাধ সাম্রাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে কেউ কেউ করছে প্রতিপক্ষকে খুনের পরিকল্পনা। একটি খুনের পরিকল্পনা এরই মধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে। ২০ বছর দেশের বাইরে থাকা এক সন্ত্রাসী দেশে ফিরেছে আওয়ামী লীগ আমলের শেষের দিকে। তাকে হত্যা করতে দুবাইয়ে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে দেখা করেছে তার অনুসারী নিছার উদ্দিন কাজল (বগা কাজল)। কাজল তার (জিসান) হাতে এরই মধ্যে তুলে দিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। এছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় পুলিশের কাছ থেকে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে সেগুলোর একাংশ চলে গেছে এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনুসারীদের হাতে।

কারাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত দুই মাসে যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বের হয়েছে তাদের মধ্যে আছে- কিলার আব্বাস, খোরশেদ আলম রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসু, সাঈদ হোসেন, সানজিদুল হাসান ইমন, নাইম আহমেদ ওরফে টিটন, পিচ্চি হেলাল, সাজু, আক্তার হোসেন প্রমুখ। ফ্রিডম সোহেল, হাবিবুর রহমান তাজ ও এস এম আরমান জামিনের চেষ্টা চালাচ্ছে। জামিন পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এখন কারাগারে থাকা তাদের অনুসারীদের জামিন করানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রকাশ্যে আছে ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালসহ অনেকেই। পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। এদিকে জিসানের সহযোগী হিসাবে এই মুহূর্তে বেশ তৎপর খিলগাঁওয়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী বগা কাজল। সে ধানমন্ডির ইমন-মামুন গ্রুপের হয়েও কাজ করছে। মামুন বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। মেরাদিয়ার একু মিয়া ও মজনু হত্যা মামলায় আলোচিত মিন্টু গ্রুপও প্রকাশ্যে এসেছে।

একসময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর গ্রুপের কয়েকজন সদস্যও সাম্প্রতিক সময়ে তৎপর হয়েছে। বগা কাজলের কাছে ২২-২৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সম্প্রতি এসব অস্ত্র মামুন, শামীম, কিলার আব্বাস ও শাহাদাতের লোকদের মধ্যে ভাগাগাগি হয়েছে। বগা কাজলের নামে বিভিন্ন সময়ে ৩৮টি মামলা হয়। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গার্মেন্টস এবং রিয়েল এস্টেট সেক্টরে চাঁদাবাজি এবং দখলদারত্বের ক্ষেত্রে সা¤প্রতিক সময়ে বেশ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে কাজল বাহিনীর। গার্মেন্টস সেক্টর থেকে কাজল নিজে চাঁদা নেয় না। তবে তার লোকজন দিয়ে টাকা আদায় করে। জমিজমা দখলের ক্ষেত্রে সে নিজে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে। সা¤প্রতিক সময়ে থানা ও কারাগার থেকে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে এর একটি অংশ গিয়েছে কাজল বাহিনীর সদস্যদের হাতে। আন্দোলনের সময় তার লোকজন থানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট করেছে।

এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন কারাগার থেকে ছাড়া পায় গত বছরের মাঝামাঝিতে। গত সেপ্টেম্বরে রাজধানীর তেজগাঁও বিজি প্রেস এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনের ওপর গুলির ঘটনায় তাকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। মামুন ছিল চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও টিপু (সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই) হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় ইমন ১৯৯৮ সাল থেকে কারাগারে ছিল। মাঝে কয়েক মাস বাইরে থাকার পর গ্রেপ্তার হয়ে টানা ১১ মাস জেলে থেকে স¤প্রতি মুক্তি পায় সে। ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকার ২ নম্বরে টিটনের নাম রয়েছে। ২০০৩ সালে গ্রেপ্তারের পর থেকেই সে কারাগারে ছিল। স¤প্রতি কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আন্ডারওয়ার্ল্ড চাঙার মিশনে থেমে নেই অন্য অপরাধীরাও। সারাদেশে প্রতিদিনই ঘটছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুনোখুনি, চাঁদাবাজির মতো অপরাধ। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর তাঁতীবাজার মণ্ডপে ছিনতাইয়ের সময় ৪ জনকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছিনতাইকারীরা পূজামণ্ডপের দিকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করলে সেখানে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কিন্তু বোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, একজন ছিনতাইকারী পূজামণ্ডপের পেছনে এক নারী দর্শনার্থীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ধরে টান দিলে তিনি চিৎকার করেন। তখন আশপাশের দর্শনার্থীরা এগিয়ে এলে ছিনতাইকারী এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। শনিবার ভোর ৩টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ চৌরাস্তা মোড়ে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হানিফ কোম্পানির বাড়িতে সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরে প্রবেশ করে ৮০ লাখ টাকা ও ৮০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে দুর্বৃত্তরা।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার ব্যাংকটাউনে পুলিশের পোশাক পরে হাইএস মাইক্রোবাস দিয়ে পথ আটকে বিশ্বনাথ ট্রেডার্সের সয়াবিন তেলের ড্রামভর্তি ট্রাক ছিনতাই, একই মহাসড়কের জোরপুল এলাকায় গরুভর্তি ট্রাক ছিনতাই, সাভার নামা বাজার এলাকায় ছোট-বড় তিনটি ট্রাক চুরি, নিরিবিলি এলাকায় তেলভর্তি আরো একটি ট্রাক ছিনতাইয়ের কুলকিনারা হয়নি। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে সাভার রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় নাভানা ফার্নিচার ফ্যাক্টরিতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ও ফার্নিচার তৈরির মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

জানা যায়, ৩ থেকে ৪ জন ডাকাত কারখানার গেটে এসে কোম্পানির মালামাল নিয়ে আসার কথা বলে চালান কপি দেখায় নিরাপত্তাকর্মীদের। গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ৩-৪ জন ডাকাত কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে তাদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপরই ভেতরে আরো ২৫-৩০ জন ডাকাত কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে মোট ১৩ জন নিরাপত্তা কর্মীর হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখে। এ সময় কোম্পানির একটি হাইয়েচ গাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল এবং মালিকের আফিসে থাকা টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়।

গত ৪ অক্টোবর রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকার একটি বাসা থেকে ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ডের ৫টি আংটি চুরির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় তানজিনা আক্তার ফারিয়া, কহিনুর বেগম ও নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু নামে তিন গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে চুরির ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। তবে কারওয়ান বাজারের তিনটি দোকানে এসব স্বর্ণের কিছু অংশ বিক্রি করে ব্যাংকে এফডিআর করেন গৃহকর্মী লাইজু। বৃহস্পতিবার দীপ্ত টিভির স¤প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।