দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী'র বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল বলেছেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সচিত্র নোয়াখালী কখনোই কৃপণতা দেখায়নি। সম্পাদকীয় নীতি অনুযায়ী আমাদের লিখতে হয়েছে শোষণ-নিপীড়ন, জোড়-জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার, অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে। নিয়মিত প্রকাশনার প্রত্যেক সংখ্যায় উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, সমস্যা ও সম্ভাবনার পাশাপাশি সমানতালে গুরুত্ব দিতে হয়েছে সরকার এবং বিরোধী দলের সংবাদ।
দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী'র ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার রাতে নিজ ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য তুলে ধরেন মোহাম্মদ সোহেল।
সোহেলের পোস্ট করা মন্তব্যটি তুলে ধরা হলো-
যৌবনের ২১ পেরিয়ে আজ রোববার (২০ অক্টোবর ২০২৪) ২২ তম বর্ষে শুভ সূচনা শুরু করেছে বৃহত্তর নোয়াখালীর গণমানুষের কন্ঠস্বর "দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী"।
২০০৩ সালের ২০ অক্টোবর নোয়াখালীর সাংবাদিকতার তৎকালীন কিংবদন্তি শ্রদ্ধেয় আমিরুল ইসলাম হারুনের প্রকাশনা ও সম্পাদনায় যাত্রা শুরু করে পত্রিকাটি। যাত্রা শুরুর পর থেকে এক ঝাঁক মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পূন্ন সাংবাদিকের লেখনিতে দৈনিক সচিত্র নোয়াখালীর পাতায় স্থান পেয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালীসহ জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, সমস্যা ও সম্ভাবনার চিত্র। যার কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পত্রিকাটি হয়ে ওঠে বৃহত্তর নোয়াখালীর গণমানুষের কন্ঠস্বর।
২০০৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী নোয়াখালী প্রেসক্লাবের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মরহুম বেলাল উদ্দিন কিরন এবং দৈনিক নোয়াখালী বার্তার সম্পাদক মরহুম আবদুল কাদের সাহেবের সহযোগিতায় দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ হয়ে ওঠে আমার। ওইদিন থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করেছি। ২০০৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় " চরউরিয়ায় বিয়ের আসর থেকে কনে পলাতক" শিরোনামে আমার প্রথম সংবাদ ছাপা হয়। পত্রিকার পাতায় নিজের লেখা সংবাদটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠি। সেই থেকে দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী'র সম্পাদক আমিরুল ইসলাম হারুন কখনো শিক্ষক, কখনো অভিভাবক, আবার কখনো সহকর্মীর ভূমিকায় হাতে-কলমে শিখিয়েছেন সাংবাদিকতা। কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করবো, কিভাবে সংবাদ লিখবো, কিভাবে সংবাদ উপস্থাপন করবো, সবই শিখিয়েছেন তিনি। সংবাদ লিখা অথবা উপস্থাপনে ভুল হলে কড়া নজরে শাসনও করেছেন তিনি।
সচিত্র নোয়াখালী'তে ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরুর পর পর্যায়ক্রমে স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি এবং বর্তমানে বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছি। দীর্ঘ ১৫ বছরের সাংবাদিকতায় স্থানীয় একাধিক পত্রিকার সম্পাদক তাদের পত্রিকায় ভালো সুযোগ-সুবিধায় কাজ করার প্রস্তাব দিলেও এক মুহূর্তের জন্যেও দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী তথা শ্রদ্ধেয় আমিরুল ইসলাম হারুনকে ছেড়ে অন্য কোথাও যায়নি।
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সচিত্র নোয়াখালীর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম হারুন কখনোই কৃপণতা দেখায়নি। সম্পাদকীয় নীতি অনুযায়ী আমাদের লিখতে হয়েছে শোষণ-নিপীড়ন, জোড়-জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার, অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে।
নিয়মিত প্রকাশনার প্রত্যেক সংখ্যায় উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, সমস্যা ও সম্ভাবনার পাশাপাশি সমানতালে গুরুত্ব দিতে হয়েছে সরকার এবং বিরোধী দলের সংবাদ।
২০১০ সাল পরবর্তী আমার লিখা বেশিরভাগ সংবাদই সচিত্র নোয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিতো। সংবাদের গুরুত্বের কারণে আমার সাংবাদিকতা পেশার দৃঢ়তা বাড়তে থাকে। ভালো কোন সংবাদ তুলে আনতে ছুটতে থাকি জেলার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তের দিকবিদিক। এভাবেই একজন ক্ষুদ্র সংবাদ কর্মী থেকে সাংবাদিক পরিচয়ে তৃপ্তির ঢেকুর গিলতে শুরু করি। সেই তৃপ্ত অনুভব থেকেই এখনো সাংবাদিকতাকেই ধারণ ও লালন করছি।
২০১১-১২ সালের দিকে দৈনিক সচিত্র নোয়াখালী পত্রিকাটি যখন ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা কুড়িয়ে নেয়, সেই সময় পত্রিকাটি সপ্তাহে ৭দিনই প্রকাশ হতো। তখন কখনো কখনো প্রথম সংস্করণের পাশাপাশি দ্বিতীয় সংস্করণও প্রকাশ করা লাগতো। পত্রিকার এমন রমরমা অবস্থা দেখে স্থানীয় পত্রিকার দুই-একজন সম্পাদক দৈনিক সচিত্র নোয়াখালীর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম হারুন এবং আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তবে বাস্তবতা হলো, যত বারই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, তত বারই ঘন অন্ধকারেও আমাদের কিছু আপন মানুষ- পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা, শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয় সহযোদ্ধা সাংবাদিকগন আলো জ্বেলে রেখেছিলেন। সেই আলোই যূথবদ্ধ হয়ে জ্বলে উঠেছিল সচিত্র নোয়াখালী'র পথচলা। যার কারণে শত প্রতিকূলতার মাঝেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে পত্রিকাটি।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আবারো দৈনিক সচিত্র নোয়াখালীর বিরুদ্ধে পুরনো ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তাই প্রতি বছর পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঢাক-ঢোল পিটিয়ে উদযাপন করা হলেও এ বছর তা সম্ভব হয়নি। আশা করছি আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সকল সংকট মোকাবেলা করে গণমানুষের সঙ্গে আমাদের পথচলা অব্যাহত থাকবে।
পরিশেষে বলবো- শ্রদ্ধেয় আমিরুল ইসলাম হারুনের স্নেহ-ভালোবাসায় সচিত্র নোয়াখালী সঙ্গে আছি এবং থাকবো। দৈনিক সচিত্র নোয়াখালীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পত্রিকার পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা, শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয় সাংবাদিকদের জানাচ্ছি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।