ফিলিস্তিনের গাজায় অবশেষে কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি। স্থানীয় সময় রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টা ১৫মিনিটে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৯ জানুয়ার) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কর্যকর হওয়ার কথা থাকলেও নতুন এক অজুহাতে যুদ্ধবিরতিতে বিলম্ব করেছে দেশটির যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
এখন পর্যন্ত হামাস প্রথম দফায় যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে, তাদের তালিকা এখনো তেলআবিবকে দেয়া হয়নি। এ কারণে যুদ্ধবিরতিতে বিলম্ব করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এ ব্যাপারে রবিবার সাংবাদিকদের কাছে একটি বিবৃতি দেবেন বলে জানিয়েছে।
এতে তিনি যুদ্ধবিরতি বিলম্বিত হওয়ার কারণ এবং পরবর্তীতে কী ঘটতে পারে তা নিয়ে জানাবেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, আমরা আপনার কাছে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ আপডেট জানাবো। আমাদের সঙ্গে থাকুন।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রবিবার যে ৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে, তেলআবিব এখনো তাদের নাম প্রকাশ করার জন্য অপেক্ষা করছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে, নামগুলি বন্দিবিনিময়ের কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে সরবরাহ করা উচিত, যা আজ স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার পরে হওয়ার কথা।
বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহু ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে নামের তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তুতি না নিতে।
শনিবার রাত পর্যন্ত বন্দিবিনিময়ের অবস্থানটিও অস্পষ্ট ছিল, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ, মধ্য এবং উত্তর গাজার সীমান্তের কাছে তিনটি পৃথক সম্ভাব্য অবস্থান তৈরি করেছে।
দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসানে শনিবার দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুমোদন পাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে।
চুক্তি অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকে যুদ্ধবিরতি এবং বিকেল ৪টায় শুরু হবে বন্দিবিনিময়। প্রথম দফায় রবিবার বিকেলে ৪ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এরপর প্রতি সপ্তাহে তিনজন করে বাকি ৩০ জিম্মি মুক্তি পাবে। এভাবে তিন দফায় বাকিসব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।
অন্যদিকে প্রথম দফায় ২৪ দিনে মুক্তি পাবেন ১৯০৪ ফিলিস্তিনি। এর মধ্য ৭৩৭ জন কয়েদি এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে গণহারে আটক করা ১১৬৭ জন ফিলিস্তিনি।
মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বুধবার গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয়ার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে। শনিবার গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা উদ্ধার সংস্থা বলেছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় একটি পরিবারের অন্তত পাঁচ সদস্য মারা গেছেন।