যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়, যা রয়টার্স সংবাদ সংস্থা প্রকাশ করেছে।
সংবাদটি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের চারটি প্রতিষ্ঠানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে, যার মধ্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিরক্ষা সংস্থা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো মূলত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তার বা সরবরাহে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরোপ করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমস্ত সম্পত্তি জব্দ করা হবে এবং তারা মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।
এদিকে ভারত, যা পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত, তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত দিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ‘দুর্ভাগ্যজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট’।
তারা দাবি করেছে, এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং সামরিক অসামঞ্জস্যতা আরো বৃদ্ধি করবে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স এবং তিনটি সংস্থার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মূলত “গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং তাদের সরবরাহের উপায়গুলোকে লক্ষ্য করে” এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি ফ্যাক্টশিটে জানানো হয়েছে যে, পাকিস্তানভিত্তিক এনডিসি দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রাম ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার উপকরণ সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের জন্য দায়ী, যার মধ্যে শাহীন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের গবেষণা সংস্থা ‘বুলেটিন’ জানায়, শাহীন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পারমাণবিক অস্ত্র বহনের সক্ষমতা রাখে, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের জটিলতাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
রয়টার্স বলছে, পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। আর এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রধারী সপ্তম দেশ হয়ে ওঠে দেশটি। বুলেটিনে পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে আনুমানিক ১৭০টি ওয়ারহেড রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তথ্যপত্রে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সাথে আরোপিত অন্যান্য সংস্থাগুলো হলো— অ্যাফিলিয়েটস ইন্টারন্যাশনাল, আখতার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং রকসাইড এন্টারপ্রাইজ, যা করাচিতে অবস্থিত।
এটি বলেছে, সংস্থাগুলো এনডিসির সাথে বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়ার জন্য কাজ করেছে। মিলার বলেছেন, “উদ্বেগের বিস্তার এবং সংশ্লিষ্ট ক্রয় কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কাজ চালিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।”