শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন ও নৈতিক মূল্যবোধ
তৈরি করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পরিবার- এ মন্তব্য করে
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শামছুল
ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষার্থীর নৈতিকতা মূলত তার পরিবার থেকেই শুরু হয়।
পরিবারের ভিত যদি দুর্বল হয়, তাহলে বিদ্যালয় বা শিক্ষক সমাজ একা তাকে সঠিক
পথে পরিচালিত করতে পারে না।
বুধবার দুপুরে নোয়াখালী পৌরসভার আহমদিয়া
আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শামছুল
ইসলাম আরও বলেন, যখন কোনো শিশু ছয় বছর বয়সে বিদ্যালয়ে আসে, তখন তার নৈতিক
মূল্যবোধের একটি বড় অংশ পরিবারে গড়ে ওঠে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ
মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিটি ধাপে নতুন জ্ঞান অর্জন করলেও প্রাথমিক
মূল্যবোধটি আসে পরিবার থেকেই। সেই ভিত্তি যদি নড়বড়ে থাকে, তাহলে
উচ্চপর্যায়ে গিয়ে তাকে আর পরিবর্তন করা যায় না।
তিনি মনে করেন,
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈতিক আচরণ, দুর্ব্যবহার, অসামাজিক
কর্মকাণ্ডের প্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ হলো- পরিবারে নৈতিক শিক্ষার অভাব।
যে শিশুটি ছোটবেলায় অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে, তাকে সামনের দিনে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যতই চেষ্টা করুক, পুরোপুরি বদলে দেওয়া খুব কঠিন।
সভায়
তিনি আরও বলেন, পিতা-মাতা যদি নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করেন,
তাহলে বিদ্যালয় একা কিছু করতে পারবে না। সন্তান কী করছে, কোথায় যাচ্ছে,
কাদের সঙ্গে মিশছে- এগুলো বাবা-মাকে জানতে হবে। পরিবার যদি দায়িত্ব না নেয়,
তাহলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য কখনও পূরণ হবে না।
তিনি
শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা, চরিত্র গঠন, নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ ও মানবিক
মূল্যবোধ বিকাশে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সমন্বিত ভূমিকার ওপর জোর দেন।
মতবিনিময়
সভায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছাবের আহাম্মদের সভাপতিত্বে বিশেষ
অতিথির বক্তব্য দেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর
রুনা নাছরীন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের
মধ্যে নোয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোমায়রা ইসলাম, কুমিল্লা
শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক আবু সালেহ মো. তারিক মাহমুদ, জেলা শিক্ষা
কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, সোনাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ
মোয়াজ্জেম হুসাইন, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার
প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মতবিনিময় সভা শেষে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন
ব্যাচের কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে
বক্তারা বলেন, নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি,
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পাঠদান, নিয়মিত অভিভাবক-শিক্ষক যোগাযোগ এবং
বিদ্যালয় পরিবেশ উন্নয়নের মধ্যদিয়ে শিক্ষার সামগ্রিক মান বৃদ্ধি সম্ভব। এ
জন্য বিদ্যালয়, পরিবার ও সমাজ, তিনটির সম্মিলিত ভূমিকার ওপর জোর দেন তারা।