ঢাকা মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪

Rupalibank

নোয়াখালীতে সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা


হারুন অর রশিদ রাজিব
৫:২৩ - বৃহস্পতিবার, মার্চ ৭, ২০২৪
নোয়াখালীতে সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা

“তুই কিসের সাংবাদিক, তুই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যা। আমাদের ভয়ে বহু হিন্দু এলাকা ছেড়ে গেছে, তোর সাংবাদিকতা ছুটাই দিমু” বলেই নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে অনুপ সিংহ (২৭) নামের এক সাংবাদিকের উপর হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পিতার সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার দু:শ্বিমপাড়া গ্রামের সিংহ বাড়িতে হামলা করা হয়। আহত সাংবাদিক মৃত পলিন চন্দ্র সিংহের ছেলে,স্থানীয় দৈনিক প্রতিদিন আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি ও সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক। এই ঘটনায় সাংবাদিক অনুপ সিংহ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সোনাইমুড়ী থানায় হামলাকারী দুই জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে সুত্রে জানা যায়, পৌরসভার দু:শ্বিমপাড়া গ্রামে সিংহ বাড়িতে কয়েকটি হিন্দু পরিবার পৈতিকসুত্রে বংশপরম্পায় বসবাস করে আসতেছে। প্রায় ২০ বছর পূর্বে আজহার আলীর ছেলে আলী আক্কাস (৫০) ও বাচ্চু মিয়া ওরফে বেচু (৫৫) সিংহ পরিবারের পাশেই জায়গা কিনে বসতঘর নির্মাণ করে। এর পর থেকেই হিন্দু পরিবারটিকে ধর্মীয় কাজে বাঁধ দেয়।  এর পূর্বে বাড়ীর শ্মশানের জায়গা দখল, যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও পূজাস্থানের শিথলা গাছ জোর পূর্বক কেটে ফেলে। তাদের অত্যাচারে ২০১৬ সালে পরেশ মজুমদার ও আমিন মজুমদার জমি বিক্রি করে ভারতে চলে যায় আর শুরেশ মজুমদার ও অরুনচন্দ্র সিংহ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। অন্য পরিবারগুলো  জমি বিক্রি করে অন্যত্র না যাওয়ায় তাদের বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে আসছে ।

 বৃহস্পতিবার সকালে অনুপ সিংহ তার পুরাতন বসতঘর মেরামত করতে শুরু করলে আলী আক্কাস ও তার সহদর বাচ্চু মিয়া ওরফে বেচুর নেতৃত্বে বহিরাগত ৮/১০জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে সাংবাদিককে লক্ষ করে বলে “তুই কিসের সাংবাদিক, তুই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যা। আমাদের ভয়ে বহু হিন্দু এলাকা ছেড়ে গেছে, তোর সাংবাদিকতা ছুটাই দিমু” বলেই অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। পরে সাংবাদিককে বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ী পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তার আত্বচিৎকারে বৃদ্ধ মা অঞ্জলী রাণী সিংহ (৫২) ও ভাতিজা শ্রাবণ চন্দ্র সিংহ(১৪) এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করে। আহতাবস্থায় সাংবাদিককে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আহত সাংবাদিক জানায়, তাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আসছে প্রতিবেশী আলী আক্কাস ও বেচু মিয়া। এর পূর্বে বাড়ীর শ্মশানের জায়গা দখল, যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও পূজাস্থানের শিথলা গাছ জোর পূর্বক কেটে ফেলে সন্ত্রাসীরা। তাদের মূল উদ্দেশ্য আমাদের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া। হামলার ঘটনায় এখনও কেউ আটক হয়নি। উল্টো হামলাকারীরা তাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকালেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানান উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।