জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর ক্যাশিয়ার মো. মমিনুল ইসলাম এখন স্ব-নামে, বে-নামে কোটি কোটি টাকার মালিক! অভিযোগ ওঠেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর সকল উন্নয়ন প্রকল্পের নিয়োগকৃত ঠিকাদারগনের কাছ থেকে অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর নাম ভাঙ্গিয়ে কমিশন বাবদ ঘুষ নিয়ে এসব অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মমিনুল ইসলাম।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালী কার্যালয়ের লাইন্সেস প্রাপ্ত একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই দপ্তর থেকে কোন কাজ করে শান্তি পায়না। প্রত্যেকটি উন্নয়ন কাজের বরাদ্দকৃত অর্থের ২% ঘুষ কমিশন হিসেবে অফিসকে দিয়ে দিতে হয়। তার ওপর কাজের বাহিরে বিভিন্ন খরচ তো আছেই। ২% ঘুষ কে নেন এমন প্রশ্নে ওই ঠিকাদারগন বলেন, অফিসের ক্যাশিয়ার মো. মমিনুল ইসলাম অফিস প্রধানের নামে নেন ১% এবং তিনি ও অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের নামে নেন ১%। এছাড়া কাজের বিভিন্ন মেয়াদের বিল গ্রহণের সময়ও ক্যাশিয়ারকে বাড়তি সম্মানি দিতে হয়। সম্মানি না দিলে চেক পেতে পায়ের জুতা ক্ষয় হয়ে যায়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর একটি সুত্র ও একাধিক ঠিকাদার আরো জানান, ক্যাশিয়ার মো. মমিনুল ইসলাম ঘুষ বাণিজ্য, নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে স্ব-নামে, বে-নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। ক্যাশিয়ার মমিনুল ইসলামের সম্পদের বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁরা জানান, নোয়াখালী সুপার মার্কেটে মমিনুল ইসলামের নুর জাহান ফ্যাশনসহ ২টি দোকান রয়েছে, যার মূল্য আনুমানিক ৮০ লক্ষ্য টাকা, শহরের বসুন্ধারা কলোনীতে রয়েছে একটি বাড়ি, যার মূল্য ৭০ লক্ষ্য টাকা, বসুন্ধারা কলোনীতে ভিপি সুমন থেকে ক্রয় করেন ১০ শতাংশ জমি, যার মূল্য ৫০ লক্ষ্য টাকা, মাইজদী আল-ফারুক একাডেমী সংলগ্ন এলাকায় ক্রয় করেন ৮ শতাংশ জমি, যার মূল্য অনুমানিক ১ কোটি টাকা, চাটখিলে ৫টি দোকান, যার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, চাটখিলে নিজ বাড়ির পাশে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রয়, মাতুয়াইলে ২টি ফ্ল্যাট ক্রয়, যার মূল্য আনুমানিক ৮০ লাখ টাকা হবে।
একজন অফিস ক্যাশিয়ার কিভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন তা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের ২% ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের বিষয়ে মন্তব্য জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলঅধিদপ্তর নোয়াখালীর ক্যাশিয়ার মো. মমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, ফোনে এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য করবো না। প্রয়োজনে এক সাথে চা খাবো, তার পরও সংবাদটি প্রকাশ না করতে প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে ক্যাশিয়ার মমিনুল ইসলামের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মন্তব্য জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফল ইসলামের মুঠোফোনে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গত ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে তাঁর হোয়াটঅ্যাপ নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোন মন্তব্য করেননি এই কর্মকর্তা।