গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে ইসরায়েলকে "ভয়াবহ ও ইচ্ছাকৃত অপরাধ"
করার অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ক্ষুধার্ত প্যালেস্টিনিয়ানদের ফাঁদে ফেলে গুলিবর্ষণ করছে। টেলিগ্রামে
প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৭ মে মার্কিন-সমর্থিত গাজা এইড ফাউন্ডেশন
কাজ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েল কমপক্ষে ১০২ জন প্যালেস্টিনিয়ানকে হত্যা এবং
প্রায় ৫০০ জনকে আহত করেছে।
মিডিয়া অফিসের বক্তব্য অনুযায়ী, "এই তথাকথিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রগুলো
দখলদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা উন্মুক্ত ও উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থাপন
করা হয়েছে। এগুলো এখন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ক্ষুধার্ত বেসামরিক
নাগরিকদের অবরোধ ও খাদ্য সংকটের সুযোগ নিয়ে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তারপর
ঠান্ডা মাথায় তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে।"
এই ঘটনাগুলোকে
সুপরিকল্পিত ও বৃহত্তর এজেন্ডার অংশ হিসেবে বর্ণনা করে মিডিয়া অফিস বলেছে,
"এই হামলার নৃশংসতা এবং এর আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে।" তারা জাতিসংঘ,
নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে অবিলম্বে
হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি ইসরায়েলি তত্ত্বাবধান বা শর্ত
ছাড়াই গাজার সীমান্ত ক্রসিংগুলো পুরোপুরি খুলে দেওয়ার দাবি করেছে যাতে আরও
রক্তপাত রোধ করা যায়।
গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণ
কেন্দ্রের কাছে একাধিক সহিংস ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে
বহু বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৯০%
জনগণ তীব্র খাদ্য সঙ্কটের মুখোমুখি, যেখানে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা সত্ত্বেও ইসরায়েল দাবি করছে যে
তারা শুধুমাত্র "আত্মরক্ষামূলক" ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হওয়ার পথে, যেখানে বেশিরভাগ
হাসপাতালই চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের অভাবে কাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো
সতর্ক করেছে যে গাজায় "ম্যানমেড famine" (মানুষসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ) তৈরি করার
জন্য ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে গণ্য হতে পারে।