বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বুয়েটে। এ ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর এমন আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনার জন্য বুয়েট মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফারদিন হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রত্যাশা তাদের।
বুয়েটের ড. এম. এ রশীদ হলের শিক্ষার্থী ছিলেন ফারদিন। রাজধানীর ডেমরার একটি বাসায় থাকলেও ফারদিন মাঝে মাঝে হলে অবস্থান করতেন।
বৃহস্পতিবার ড. এম. এ রশীদ হলের শিক্ষার্থী রাফির সঙ্গে কথা হয় গণমাধ্যমের। তিনি বলেন, এ ঘটনায় হলের শিক্ষার্থীরা খুবই শোকাহত। সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফারদিন। আমাদের প্রত্যাশা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
রশীদ হলের আরেক শিক্ষার্থী নাফিস বলেন, তিন বছর আগে আমরা আবরারকে হারিয়েছি, আবার এমনটি ঘটল। আবরারের ঘটনাটা তো আমরা জানতাম। কারণ সেটি হলের মধ্যেই ঘটেছে। কিন্তু এটা খোলাসা হচ্ছে না। আশা করছি তদন্তে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে ও জড়িতরা শাস্তি পাবে।
বুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা হয় সাবেক শিক্ষার্থী রাশেদের সঙ্গে। এ ঘটনার বিষাদ ছুঁয়েছে তাকেও। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বুয়েটের একজন মেধাবী এভাবে হারিয়ে গেল। তাকে যে হত্যা করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। কে করল, কীভাবে করল এখন এটা খুঁজে বের করা জরুরি।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ফারদিন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তার অকাল মৃত্যু বুয়েটের জন্য, সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য ক্ষতি। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত পুলিশ তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ সাজা দেবে বলে আমরা এ প্রত্যাশা করি।
গত ৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে রামপুরায় বান্ধবী বুশরাকে তার বাসায় নামিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে; তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বান্ধবী বুশরা ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুশরার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।