ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫


https://www.ajkerbazzar.com/wp-content/uploads/2025/06/728X90_Option.gif

আমড়া বিক্রি করেই চলে সৈয়দ আলীর সংসার


স্মার্ট ডেক্স
১৬:০৮ - সোমবার, নভেম্বর ২১, ২০২২
আমড়া বিক্রি করেই চলে সৈয়দ আলীর সংসার

মাহবুব ইসলাম :: জীবিকার তাগিদে মানুষ কত কিছুই  করে থাকে , পারি দেয় কত শত পথ কেউবা আবার পারি জমায় দেশ থেকে বিদেশে । সব কিছুর মূলেই থাকে জীবিকার সন্ধান আর একটু ভাল থাকার আশা । 

নিজের পরিবার কে একটু ভাল রাখতে সন্তানদের গায়ে একটা ভাল জামা পরিধান করাতে তিনবেলা ভালমন্দ দুমুঠো খাবার নিজে খাওয়ার জন্য এবং পরিবারের মুখে তুলে দেওয়ার জন্য সেই সুদূর  হবিগঞ্জ জেলা থেকে  প্রায় বছর খানেক আগে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে পারি জমান রাজধানী ঢাকা তে।  

ঢাকা এসে প্রথমে চাকরী করেন ফুটপাতে  আনারস বিক্রেতার দোকানে। কাজ করেন বেশ কিছুদিন, দৈনিক  বিক্রি অনুযায়ী দিতেন দিন মজুরি টাকা । তাতে কোন রকমে চলত তার নিজ সংসার  । 

বাড়িতে আছে তিন ভাই ও বৃদ্ধ বাবা-মা । তাদের জন্যও প্রতি মাসে পাঠাতে হয় খরচের টাকা। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যবসা করবেন । বোন জামাইয়ে পরামর্শে ব্যবসার জন্য স্থান নির্ধারণ করেন তিতুমীর কলেজে। শুরু করে দেন সরকারি তিতুমীর কলেজের প্রধান গেইট সংলগ্ন ডান পাশের আমড়া  ব্যবসা ।  আমাড়া খেতে খেতে কথা হয় তার সাথে জানান তার বর্তমান পরিস্থিতির কথা । 

সৈয়দ আলী বলেন, "বাড়িতে থাকতে মানুষের কাজ করতাম যা কামাই হইত তাতে সংসার চলত কোন রকম । তখন ঢাকায় আমার বইন জামাই আনারস বেচত তার সাথে কথা কইলাম সে আমারে ঢাকায় নিয়া আসল এবং তার আনারস এর দোকানে কাজ দিল। আর তহন নতুন আইছি আগেই কোন ব্যবসা-বাণিজ্য ধরি নাই তার ওইখানে কাজ করতাম ।হে বেচা বিক্রি বুঝে আমারে ঐ হিসাবে টাকা দিত এইভাবে দুই মাস যাওয়ার পরে হেই আমারে কইলো তুমি একটা ব্যবসা কর । তহন আমি ভাবলাম কি ব্যবসা করমু? পরে আমি নিজেই ভাবলাম এই কলেজের গেটে দেখি অনেকেই ব্যবসা করে কিন্তু এই জায়গায় কেউ আমড়া ব্যবসা করে না,বইন জামাইও কইল কর । তাই আমি এই আমড়া ব্যবসাটাই নেই । আমার পরিবারে আমার মা বাবা আছে তারা বাড়িতে তিন ভাই এর সাথে থাকে আমি প্রতি মাসে তাদের জন্য টাকা পাঠাই আর দুই এক দিন পরে পরেই ভাইদের ফোন দিয়া তাদের সাথে কথা কই।  ঢাকায়  আমার এক মেয়ে ও দুই ছেলে  আর আমার স্ত্রী রে নিয়া আমি কড়াইল বস্তিতে থাকি। আমার স্ত্রী এক বাসায় কাজ করে । "

বেচা বিক্রি  ও কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের আচার আচরন নিয়ে সৈয়দ আলী বলেন, "এখানে বেঁচা কিনা খারাপ অয় না , কলেজ বন্ধ থাকলে একটু কম অয় আর কি । তাও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আল্লাহপাক ভালই রাখছে । আর আমি যত দিন ধইরা এইখানে ব্যবসা করতাছি আমার সাথে অহন পর্যন্ত কেউ কোনো খারাপ আচরণ করে নাই আর এইখানে  কেউ কোন দিন ও দশটা টেহা  চান্দা চায়  নাই। এই কলেজের পোলাপাইন গোলা আমি দেখছি খুব ভালা।"