দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ২৩টি স্টেন্ট বা রিংয়ের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
নতুন এ মূল্য তালিকায় হৃদরোগের চিকিৎসায় জরুরি এ উপকরণের প্রকারভেদে সর্বনিম্ন মূল্য ২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ৬৮ হাজার টাকা বেঁধে দিয়েছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে দাম কমানোর তথ্য জানানো হয়।
অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, এটা দাম বাড়ানো-কমানোর ধারাবাহিকতার একটা অংশ। আমরা দীর্ঘ দিন থেকে স্টেন্টের দাম কমানোর চেষ্টা করছিলাম। এর প্রেক্ষিতেই এটা করা হয়েছে। এখন থেকে সবাই এই দামে স্টেন্ট বিক্রি করবেন। সবগুলো হাসপাতালে নতুন এই মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে হবে।
বাংলাদেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন দেশের তৈরি ২৬ ধরনের স্টেন্ট ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। নতুন মূল্য তালিকায় এগুলোর দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। মাস কয়েক আগে তিনটি স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছিল, যেগুলো এখন অপরিবর্তিত রয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওষুধ প্রশাসন যখন স্টেন্টের দাম নির্ধারণ করে দেয় তখন আমদানিকারকদের একটি বড় অংশ নতুন দাম নিয়ে আপত্তি তুলেছিলে সরবরাহ বন্ধ রেখেছিলেন। বিষয়টি আদালতেও গড়িয়েছিল। তবে মঙ্গলবার নতুন দাম নির্ধারণের পর এটি নিয়ে ‘খুব একটা আপত্তি’ না থাকার কথা বলেছেন মেডিকেল ডিভাইস ইমপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়াসিম আহমদ।
কোন রিংয়ের কত দাম নির্ধারণ
পোল্যান্ডের তৈরি অ্যালেক্স প্লাস ব্র্যান্ডের দাম ৬০ হাজার টাকা, অ্যালেক্স ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা, অ্যাবারিস ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জার্মানির করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর ব্র্যান্ডের দাম ৫৩ হাজার টাকা, করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর নিও ব্র্যান্ড ৫৫ হাজার টাকা, জিলিমাস ব্র্যান্ড ৫৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের ওরসিরো ব্র্যান্ডের দাম ৬৩ হাজার টাকা, ওরসিরো মিশন ৬৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি জেনোস ডেস ব্র্যান্ডের দাম ৫৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।
স্পেনের ইভাসকুলার এনজিওলাইটের দাম ৬২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জাপানের আল্টিমাস্টারের দাম ৬৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের অ্যাবলুমিনাস ডেস প্লাসের দাম ৬৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।
ভারতে তৈরি মেটাফর ব্র্যান্ডের দাম ৪০ হাজার টাকা, এভারমাইন ফিফটি ব্র্যান্ড ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম মর্ফ ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম ৪৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাফিনিটি-এমএস মিনির দাম ৬০ হাজার টাকা, ডিরেক্ট-স্টেন্ট সিরো ৬৬ হাজার টাকা এবং ডিরেক্ট-স্টেন্ট ৩০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের তৈরি বায়োমেট্রিক্স নিওফ্ল্যাক্সের দাম ৬০ হাজার টাকা, বায়োমেট্রিক্স আলফা ৬৬ হাজার টাকা এবং বায়োফ্রিডম ৬৮ হাজার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ধমনীতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক ক্রিয়া সচল রাখতে এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে স্টেন্ট বা করোনারি স্টেন্ট পরানো হয়। প্রচলিত ভাষায় এটি রিং হিসেবে পরিচিত।