তীব্র তাপদাহের কারণে চাঁদিফাটা গরমে জ্বলছে পুরো দেশ। আর এমন পরিস্থিতিতে শরীরে পানির ঘাটতি হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
তাই শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে চাইলে এই গরমে নিয়মিত পানি পান করতেই হবে। আর এই বিষয়টা মাথায় রেখেই একদল স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি গরমে পানির পাশাপাশি মাঝে মধ্যে ফলের রস খান। আর অপর একটি দল আবার ফলের রসের ওপর বাজি না ধরে ওআরএস পান করেই দিন কাটান।
এখন প্রশ্ন হলো, ওআরএস নাকি ফলের রস, কোনটা খেলে গরমকালে শরীর থাকবে সুস্থ? আর সেই উত্তর দিতেই ভারতের বেসরকারি গণমাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদার। তাই আর সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব জেনে নিই তার মতামত।
মীনাক্ষী মজুমদারের কথায়, গরমে তাজা ফলের রস নিয়মিত খেতেই পারেন। তাতে যেমন পানির ঘাটতি মিটে যাবে, ঠিক তেমনই শরীরে প্রবেশ করবে অত্যন্ত উপকারী সব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শুধু তাই নয়, যেকোনো ফলের রস থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ মেলে। তাই এই গরমে শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে চাইলে ফলের রসকে জায়গা করে দিতেই হবে। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে কোটি কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে ওআরএস। তাই সারা বিশ্বেই ওআরএস-এর এত কদর। আর সেই কারণেই চাঁদিফাটা গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত ওআরএস খেতেই পারেন। তাতেই দেহে পানির ঘাটতি মিটে যাবে। এমনকী ফিরবে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য। আর সবথেকে বড় কথা, বাচ্চা থেকে বুড়ো– সবাই ওআরএস খেতে পারেন। তাই গরমকালে সুস্থ থাকতে হাতের কাছে ওআরএস থাকা মাস্ট।
ফলের রস নাকি ওআরএস খাবেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মজুমদার জানালেন, এই ২ পানীয়ওই শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে ফলের রস এবং ওআরএস, এই ২ পানীয়ই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে হবে। তবে ডিহাইড্রেশন হলে বা ডায়ারিয়ার কবলে পড়লে আর ফলের রসে কাজ হবে না। তখন ওআরএস-এর শরণাপন্ন হলেই ফিরবে স্বাস্থ্যের হাল। তাই এই বিষয়টা এখন থেকেই মাথায় ঢুকিয়ে নিন।
বাড়িতেই বানাতে হবে ফলের রস
বাজারজাত যেকোনো বোতলবন্দি ফলের রস খেলে কিন্তু তেমন একটা লাভ পাবেন না। কারণ এইসব ফলের রসে থাকে চিনি এবং ফ্লেভারের ভাণ্ডার যা কিনা শরীরের ক্ষতি করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তার চেয়ে বরং টাটকা ফল কিনে এনে বাড়িতে রস করে খান। ব্যস, তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে। তবে ডায়াবিটিস, হার্টের অসুখ বা অন্য কোনো ক্রনিক রোগ থাকলে নিয়মিত ফলের রস খাওয়ার আগে অবশ্যই একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। নইলে বিপদ আরো বাড়বে বই কমবে না।
সুস্থ থাকুন এই নিয়ম মেনে
এই গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে দিনে অন্ততপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করতেই হবে। সেই সঙ্গে পাতে রাখুন সবুজ শাক, সবজি এবং ফলের ভাণ্ডার। আর এড়িয়ে চলুন ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিংকস, আইসক্রিম, রেডমিটের মতো একাধিক ক্ষতিকর খাবার। ব্যস, এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই আপনাকে আর এই গরমে সমস্যার ফাঁদে পড়ে বেজায় কষ্ট পেতে হবে না।