ঢাকা সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

Rupalibank

নোয়াখালীতে বেহাল সড়কে ভোগান্তি, দ্রুত সংস্কারের দাবি


মোহাম্মদ সোহেল, স্মার্ট বাংলাদেশ
১১:০২ - শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪
নোয়াখালীতে বেহাল সড়কে ভোগান্তি, দ্রুত সংস্কারের দাবি

নোয়াখালীতে ভয়াবহ বন্যায় সড়ক ব্যবস্থার বেহাল দশা বিরাজ করছে। জেলার ৮টি উপজেলায় বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে বেশিরভাগ গ্রামীণ পাকা সড়ক। এতে সড়কের কার্পেটিং ওঠে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সাধারণ মানুুষকে যোগাযোগে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ। থমেেক যাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি। ভুক্তভোগী পথচারী ও স্থানীয়রা বলছেন এগুলো সড়ক নয়, যেন একেকটি মৃত্যু ফাঁদ। শীঘ্রই সংস্কারের পদক্ষেপ না নিলে সড়কগুলো চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নোয়াখালীর তথ্য মতে, এবারের ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে মানুষের বাড়িঘর, পথঘাট ও যোগযোগ ব্যবস্থা। জেলার সদর, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ি, সেনবাগ, চাটখিল উপজেলাসহ বন্যাকবলিত ৮টি উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে এলজিইডি নির্মাণাধীন প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার রাস্তা ও ৪০১টি ব্রীজ-বক্স কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পুনঃনির্মাণ ব্যায় হতে পারে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সরেজমিন জেলা সদরের মাইজদী বাজার-শরীফপুর সড়ক, নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সড়ক, বিনোদপুর সড়ক, এওজবালিয়া ইউনিয়নের মনতাজ মিয়ার দোকান থেকে আনন্দ বাজার সড়ক, বেগমগঞ্জের গাবুয়া-এখলাছপুর সড়ক’সহ বেশ কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়কের কার্পেটিং ওঠে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়কে এক থেকে দেড় ফুট গর্ত তৈরী হয়েছে। গর্তগুলো কাঁদায় টইটম্বুর করছে। আবার বেশ কয়েকটি সড়ক এখনো  পানির নিচে তলিয়ে আছে। এসব সড়কে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা, ভাঙছে গাড়ীর যন্ত্রাংশ। স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগামী ছাত্র-ছাত্রীরা। বন্যাকবলিত এলাকায় বেশ কিছু ব্রীজ-বক্স কালভাটও ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেছে। যা মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের মনতাজ মিয়ার দোকান-আনন্দ বাজার সড়কের বাসিন্দা মনির আহম্মদ বলেন, বন্যায় এই সড়কের ওপর দেড় থেকে দুই ফুট পানি ওঠে গেছে। এখন বন্যার পডানি  নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়কের কার্পেটিং ওঠে বড় বড় গর্তের তৈরী  হয়েছে। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে যানবাহন তো দুরের কথা মানুষ চলতেও কষ্ট হয়। দ্রুত সড়কটি মেরামতের দাবি জানান তিনি।

মাইজদী বাজার-শরীফপুর সড়কে চলাচলকারী ভ্যানগাড়ী চালক আবদুর রব বলেন, এই রাস্তায় গাড়ী চালানোর কোন উপায় নেই। তার পরও অভাবের তাড়নায় বের হতে হচ্ছে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত থাকায় গাড়ীর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যায়। প্রতিদিন গাড়ী থেকে যা আয় করি, তার বেশিরভাগই চলে যায় গাড়ী মেরামতে।

বেগমগঞ্জের গাবুয়া-এখলাছপুর সড়কের বাসিন্দা আরাফাত ভূঁইয়া বলেন, আমাদের সড়কটি এখনো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। বাড়ি থেকে বের হলেই তারা সড়কের গর্তে পড়ে বই-খাতা ভিজিয়ে ফেলে। অনেকেই হাত-পাও ভেঙে ফেলেছে। সড়কের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়কটি সংস্কার চান এলাকাবাসী।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার রাস্তা ও ৪০১টি ব্রীজ-বক্স কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পুনঃনির্মাণ বা মেরামতে ব্যায় হতে পারে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ পেলেই সড়কগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হবে।