ইসরায়েল গাজা যুদ্ধের ১ বছর পূর্তির আগে লেবানন ও গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে লেবাননে অন্তত ২৫ জন এবং গাজায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ইসরায়েলের হাইফা শহরে কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (৬ অক্টোবর) এই হামলা ও পাল্টা হামলার খবর নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। সেই হামলার ফলে গাজায় প্রায় ৪২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। হামলার এক বছর পূর্তির প্রাক্কালে লেবানন ও গাজায় ইসরায়েলি হামলা নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের হাইফা শহরে ‘ফাদি ১’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালায়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা ঠেকাতে ব্যর্থ হলে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শহরে আঘাত হানে এবং বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়। একই সময়ে ইসরায়েল দক্ষিণ বৈরুতসহ লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, বৈরুতে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দফতর ও অস্ত্রাগারে আঘাত হেনেছে তাদের যুদ্ধবিমান।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় রবিবার ২৬ জন নিহত হন। হামাস পরিচালিত গাজা সরকার জানিয়েছে, একটি মসজিদ ও একটি স্কুলে এই হামলা চালানো হয়, যেখানে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ‘সুনির্দিষ্ট হামলা’তে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর দাবি করলেও গাজা সরকার বলছে, হামলায় সাধারণ মানুষও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কায়ানি গত সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ গত মাসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা এখন একটি যৌথ কমান্ডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে এবং পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।
ইসরায়েল বলেছে, তারা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে উত্তর সীমান্তে নতুন করে কয়েকটি সামরিক অঞ্চল তৈরি করেছে। এছাড়া লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সাথে বৈঠকের আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াভ গালান্ট বলেছেন, ইসরায়েল নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা রয়েছে এবং আমরা প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করব।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় কাইফুন ও কিমাতিয়ে অঞ্চলে ১২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া সাম্প্রতিক হামলায় লেবাননে মোট ২৫ জন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি হামলায় অসংখ্য বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের সামিল।