নরসুন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। ২৫০ বছরের পুরনো এই মসজিদে, মানুষের মনের আসা, আকাঙ্ক্ষা, কামনা ও বাসনা পূর্ণ হবে বলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এই মসজিদে দান করে। দানবাক্স থেকে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে পাওয়া যায় চিঠিও। গতবারের তুলনায় এবার পাওয়া যায় অনেক বেশি চিঠি।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দানবাক্স খোলা হলে মসজিদের ১১টি দানবাক্স থেকে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। সঙ্গে পাওয়া গেছে, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা ও বিভিন্ন চিরকুট। যা এক বস্তা হয়।
টাকা গণনার শেষে দানবাক্সে পাওয়া চিঠিগুলোর একটিতে তামান্না আক্তার নামে একজন প্রেমিকা তার প্রিয় মানুষ, আলামিন যেন তাড়াতাড়ি দেশে আসে এবং তাদের এক করে দিতে চিঠি লিখেছেন।
চিঠির মধ্যে যা লেখা ছিল:
হে আল্লাহ তায়ালা আমি যেন আমার প্রিয় মানুষটারে নিজের করে পাই, আল্লাহ আমার আর আলামিনের জোড়া টা মাবুদ এক করে দিও আলামিন+তামান্না মাবুদ আমার প্রিয় মানুষটা যেন খুব তাড়াতাড়ি দেশে আসে আমাদের এক করে দাও।
আব্দুস সামাদ নামের এক যুবকের দেয়া চিঠিতে যা লিখা ছিলো তা হুবাহু তুলে ধরা হলো:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
প্রিয়, খাদিজা আক্তার লিপি, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে তোমার নামে একটা মানত করেছিলাম তা পূর্ণ করলাম তুমি নেই তো কি হয়েছে তোমার দেয়া স্মৃতি নিয়ে বাঁচবো আজীবন।
আমার কি দোষ ছিল? তোমার একটা হিন্দু ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরও আমাকে এভাবে নষ্ট করলে, আমি তোমাকে অভিশাপ দিব না তোমাদের হবিগঞ্জ শহরে আমি অনেক মেয়ে দেখেছি কিন্তু তোমার মত কাউকে পেলাম না। আমি আসা রাখি তুমি একসময় আমার হবে। যদিও তুমি বাচ্চার মা হও, তবুও আমার আফসোস থাকবে না।
-ইতি তোমার আব্দুস সামাদ
প্রেমিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে এক নারীর খোলা চিঠি:
আমি তোমার পরে আমার মা-বাবা, তারপরে আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি তো সবকিছুই জানো। আমি আমার প্রতিটি মোনাজাতে শুধু তাকেই চাই। আল্লাহ সে যদি আমার জন্য কল্যাণকর না হয়, তাহলে তুমি তার ভিতর কল্যাণ দান করো- আর আমার করে দিও। আল্লাহ তোমার কাছে আমার একটাই চাওয়া তুমি আমার প্রিয় মানুষটাকে আমার করে দিও।
উল্লেখ্য, শনিবার কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর মসজিদের দশটি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক খোলা হয়। প্রায় ৪০০ জনের একটি দল ১১ ঘণ্টা গণনা শেষে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গেছে।